‘উজ্জ্বল গৌরব’ প্রাইম ইউনিভার্সিটি

প্রথম পাতা » ক্যাম্পাস » ‘উজ্জ্বল গৌরব’ প্রাইম ইউনিভার্সিটি


ফাইল ছবি

প্রাইমডেস্কঃ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে অনুষ্ঠিত ৪টি পাবলিক পরীক্ষায় প্রতিবছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ নিয়ে উত্তীর্ণ হলেও এদের মধ্যে মাত্র ২০ থেকে ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী মেডিকেল, ইঞ্জিনীয়ারিংসহ দেশের সেরা-উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়। সাম্প্রতিককালে এমনও দেখা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ তাদের সম্মান (প্রথম বর্ষ) শ্রেণিতে ভর্তি করার জন্য যোগ্য যথেষ্ট শিক্ষার্থী পায়নি।

সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে না পারা এসব ‘মেধাবী’ তাদের আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় পরবর্তীতে দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বিভিন্ন কলেজে উচ্চশিক্ষার পাঠ শেষে চাকরির বাজারে অবতীর্ণ হয়। কিন্তু সেখানেও হাজারটা বিপত্তি। প্রতিবছর দেশে স্নাতকোত্তর স্তরের শিক্ষা শেষ করে যে পরিমাণ শিক্ষার্থী বের হয়, তাতে এমনিতেই চাকরির বাজারে সৃষ্টি হয় তীব্র প্রতিযোগিতা। এছাড়া একদিকে সরকারি চাকরির সংখ্যা কম, অন্যদিকে বেসরকারি চাকরিতেও কর্তৃপক্ষের পছন্দ সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পাস করা শিক্ষার্থীর ‘ব্র্যান্ড’ সার্টিফিকেট। সম্প্রতি শিক্ষার্থীর সামাজিক ও ব্যক্তিগত যোগাযোগ এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে কর্মদক্ষতাও চাকরি পাওয়ার জন্য আবশ্যকীয় শর্ত হয়ে উঠেছে। সবকিছু মিলিয়ে চাকরি পাওয়া দিনদিনই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে। বিষয়গুলো নিয়ে নাগরিক মনে নানা প্রশ্ন সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি দেশের শিক্ষার মান নিয়ে চলছে বিতর্ক। তবে একটি বিষয়ে সবাই একমত যে, মানসম্মত শিক্ষা ছাড়া ‘সাদাসিধে গ্রাজুয়েট’ দেশের ও সংসারের জন্য ‘বোঝা’ হয়ে দাঁড়াচ্ছে কিনা সেটা ভাবার সময় এখনই।

‘শিক্ষার মান শুধুমাত্র উচ্চশিক্ষার জন্য প্রযোজ্য বা উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেই এর মান নির্ধারণ করা হয়, বিষয়টি এমন নয়’ মন্তব্য করে দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ইতোমধ্যেই পরিচ্ছন্ন ও মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের জন্য সুনাম অর্জন করা ‘প্রাইম ইউনিভার্সিটি’র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা মীর শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার মানের বিষয়টি চর্চা করে যেতে হয়। প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত যদি শিক্ষার মান ভালো হয়, সেই শিক্ষা নিয়ে যেসব শিক্ষার্থী পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে আসবে, তারাও ভালো শিক্ষা লাভ করে যথেষ্ট যোগ্য হয়েই চাকরির বাজারে প্রবেশ করতে পারবে।’ দেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় হাজার হাজার জিপিএ-৫ বের হলেও এই জ্ঞান শিক্ষার্থীর ‘আত্মোপলব্ধি’র মাধ্যমে অর্জিত না হওয়ায় বাস্তব জীবনে তা কাজে লাগছে না বা জীবনের সঙ্গে মানানসই হচ্ছে না মন্তব্য করে এই সাবেক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে, এখন শুদ্ধভাবে এক পাতা ইংরেজি লিখতে পারে এমন শিক্ষার্থী খুবই কম, এটা শুধু শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রেই নয়, সরকারি-বেসরকারি সকল ক্ষেত্রেই একই অবস্থা।’

নিজের চাকরি জীবনের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমি সরকারের প্রশাসনে কাজ করেছি, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সুবাদে এখনো সরকারি প্রশাসনের সঙ্গে নানা কাজে আমাকে যোগাযোগ করতে হয়। আমার সময়কালের সঙ্গে বর্তমান সময়ের তুলনামূলক বিচার করে আমার কাছে মনে হয়, ‘শিক্ষার মান আসলেই ভালো অবস্থানে নেই। এটি নিয়ে পরিকল্পিতভাবে অনেক কাজ করতে হবে।’ মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা সৃষ্টির প্রতিবন্ধকতা কি? প্রশ্নের উত্তরে মীর শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘প্রতিবন্ধকতা হলো সদিচ্ছা। আমি (সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ) সত্যিই এটি করতে চাই কিনা, সেটি আগে নিশ্চিত করতে হবে। তারপর আসবে, এটি কিভাবে করা যায়। এর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পরিকল্পিতভাবে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করবেন। অর্থাৎ আমি বলতে চাচ্ছি, একটা পরিকল্পনা গ্রহণ করে পরিপত্র জারি করে অর্ডার করে দিলাম, তাহলে হবে না। অর্ডারটি মাঠপর্যায়ে সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলো কিনা সেটাও নিয়মিত নজরদারি করতে হবে।’ শিক্ষার গুণগতমান রক্ষায় প্রাইম ইউনিভার্সিটি কি করছে প্রশ্নের উত্তরে মীর শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘ভালো বিশ্ববিদ্যালয় বলতে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার গুণগত মানকেই বোঝায়। ভালোমানের ক্যাম্পাস শিক্ষার মান ও পরিবেশ বজায় রাখতে সহায়ক। এদিক থেকে প্রাইম ইউনিভার্সিটি শতভাগ সফল। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো, শিক্ষার পরিবেশ অর্থাৎ শিক্ষক, লাইব্রেরি ও প্রয়োজনীয় শিক্ষা সরঞ্জাম সবকিছুই আমাদের রয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ভেতর নেতৃত্ব বিকাশে নানা ধরনের ‘এক্সট্রা-কারিকুলাম’ কার্যক্রম নিয়মিতই চলছে।

তিনি জানান, ২০০২ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত যেসব শিক্ষার্থী পড়া শেষ করে বের হয়েছে তাদের প্রায় অধিকাংশই সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে কাজ করছেন। মীর শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘মূলত পড়াশোনা শেষে শিক্ষার্থীরা যাতে দক্ষ পেশাজীবী হয়ে নিজের উপযুক্ত পেশা গ্রহণ করতে পারে, সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রথম থেকেই কাজ করে যাচ্ছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। এ প্রসঙ্গে তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘প্রতিষ্ঠার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রায় ৯ হাজার শিক্ষার্থী বের হয়েছে। এদের অধিকাংশই সারাদেশের বিভিন্ন আদালতে সুনামের সঙ্গে আইন পেশায় কাজ করছেন। এছাড়া এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১১ জন শিক্ষক ও ১ জন শিক্ষার্থী জাস্টিস হয়েছেন। অন্যদিকে এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিবছর যেসব শিক্ষার্থী বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়, তাদের প্রায় শতভাগই উত্তীর্ণ হয়।’ এসব দিক বিবেচনা করে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ অন্য সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় অনেক এগিয়ে মন্তব্য করে মীর শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘অন্য বিভাগগুলোর উজ্জ্বলতার পাশাপাশি আইন বিভাগ প্রাইম ইউনিভার্সিটির ‘উজ্জ্বল গৌরব’। ধারাবাহিক উন্নয়নের মাধ্যমে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের শীর্ষ সেরাদের তালিকায় পৌঁছে দিতে সকল মনোযোগ এখন সেদিকেই বলে জানান মীর শাহাবুদ্দিন।

এক নজরে প্রাইম ইউনিভার্সিটি: প্রাইম ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মীর শাহাবুদ্দিন, প্রফেসর ড. এম আব্দুস সোবহান ও একঝাঁক শিক্ষানুরাগীর হাত ধরে ২০০২ সালে রাজধানীর মিরপুরে যাত্রা শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়টি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘ পথচলায় মানসম্মত গ্রাজুয়েট তৈরিতে ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়টি সুনাম অর্জন করেছে। শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বর সেকশনের মাজার রোডে বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে নিজস্ব প্রায় দেড় লাখ বর্গফুটের অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ১১ তলা ভবন ও স্থায়ী ক্যাম্পাস। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি অনুষদের জন্য রয়েছে পৃথক ফ্লোর, সুপরিসর মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম, সেমিনার হল ও আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ ১৮টি ল্যাব। এছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে অনলাইন ব্যবহারের সুবিধাসহ ৩০ হাজার বই সমৃদ্ধ লাইব্রেরি। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫টি অনুষদ-ফ্যাকাল্টি অব বিজনেস স্টাডিজ, ফ্যাকাল্টি অব ইঞ্জিনীয়ারিং, ফ্যাকাল্টি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি (আইটি), ফ্যাকাল্টি অব সায়েন্স এন্ড সোস্যাল সায়েন্স এবং ফ্যাকাল্টি অব ল। এই অনুষদগুলোতে প্রায় ৪ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে।

দেশের যেসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ‘নিজস্ব’ বৈশিষ্ট্যের জন্য ইতোমধ্যে সুনাম অর্জন করেছে প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয় তেমনই একটি বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ইতোমধ্যেই তাদের আইন বিভাগের সফলতায় নজর কেড়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে। বার কাউন্সিলের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ৪ বছর মেয়াদি এল.এল.বি (সম্মান), ১ বছর মেয়াদি এল.এল.এম ও ২ বছর মেয়াদি এল.এল.এম কোর্স। চাকরিজীবীদের সুবিধার কথা বিবেচনায় রেখে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে দিবা শাখার পাশাপাশি রয়েছে সান্ধ্যকালীন শাখাও। এখানে রয়েছে ‘মুট কোর্ট’ বা আদালতের আদলে ক্লাসের ব্যবস্থা। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিভাগের বড় সাফল্য হচ্ছে, প্রায় এক দশক ধরে এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা বার কাউন্সিল পরীক্ষায় প্রায় শতভাগ পাস করছেন। করছেন এই কোর্সের শিক্ষার্থীদের আদালতের কার্যধারা, বিভিন্ন ধরনের ড্রাফটিং, অ্যাডভোকেসি প্রভৃতি বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আইনের অধ্যাপক, আইনজীবী ও ব্যারিস্টারের সমন্বয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে দায়িত্ব পালন করছেন দক্ষ শিক্ষক শ্রেণি। এছাড়া খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন দেশসেরা সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিষয়ের শিক্ষকরা।

‘শিক্ষার গুণগতমানের দিকেই কর্তৃপক্ষের সকল মনোযোগ’ মন্তব্য করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান আশরাফ আলি বলেন, ‘শিক্ষার গুণগতমান রক্ষায় আমাদের কোনো আপোষ নেই। এর জন্য যা প্রয়োজন যেমন-অবকাঠামো, ভালো শিক্ষক, প্রয়োজনীয় বই, শিক্ষা সরঞ্জাম-যখন যেমন দরকার, সবার আগে সেটাই নিশ্চিত করি।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান তথা সার্বিক মান উন্নয়নে আমরা কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি, আরও কিছু নেওয়া হবে। এসব পরিকল্পনা সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়িত হলে প্রাইম ইউনিভার্সিটি অনেক দূর এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে নিজের নানা স্বপ্নের কথা উল্লেখ করে উপাচার্য প্রফেসর ড. এম আবদুস সোবহান বলেন, ‘শিক্ষার মান উন্নয়ন তথা মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষাসহায়ক আধুনিক সরঞ্জাম এবং দক্ষ শিক্ষকদের পিছনেই আমাদের সকল বিনিযোগ।’ বিশ্ববিদ্যালয়টি একদিন দেশের শীর্ষ সেরাদের তালিকায় স্থান করে নেওয়ার পাশাপাশি দেশের বাইরেও সুনাম অর্জন করবে এমনটাই প্রত্যাশা করেন তিনি।