বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে স্থান পেতে হলে
প্রথম পাতা » ক্যাম্পাস » বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে স্থান পেতে হলেপ্রাইমডেস্ক : সম্প্রতি যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান কিউএস ২০তম সংস্করণে বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র্যাঙ্কিং-২০২৪ প্রকাশ করেছে। বিশ্বসেরা ১৫শ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় এই তালিকার শীর্ষ ৫০০-এর মধ্যে স্থান পায়নি। তবে প্রতিবেশী দেশ ভারতের ১১টি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। এমনকি পাকিস্তানেরও দুটি বিশ্ববিদ্যালয় আছে।
তবে এবার বেশি হতাশা লেগেছে যখন এশিয়ার র্যাঙ্কিং প্রকাশ পায়। যুক্তরাজ্যভিত্তিক টাইমস হায়ার এডুকেশনের ‘এশিয়ান ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং ২০২৪’ প্রকাশ হয় গত ৩০ এপ্রিল। এশিয়ার ৩১টি দেশের মোট ৭৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে করা তালিকায় শীর্ষ ৩০০-তে নেই বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।
কিউএস র্যাঙ্কিংয়ে ছয়টি সূচকে মোট ১০০ নম্বরের মূল্যায়ন করা হয়। একাডেমিক খ্যাতি ৪০, চাকরির বাজারে সুনাম ১০, শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত ২০, শিক্ষকদের গবেষণা ২০ এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষক অনুপাত ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী অনুপাতে ১০ নম্বর ধরা হয়। এসব সূচকে আমরা অনেক পিছিয়ে।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক থাকা আবশ্যক। কিন্তু আমাদের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে সেটা মানা হয় না বা নেই। মানদণ্ড অনুযায়ী শিক্ষকের পদ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ছাড় করে না বলেও অভিযোগ রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ আমার কর্মস্থল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮ হাজার ৪৫১। শিক্ষক ২২৪ জন। অর্থাৎ ৩৮ শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশি শিক্ষক বা শিক্ষার্থী নেই বললেই চলে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পলিসি নিতে হবে, যাতে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি এবং কিছু বিদেশি ফ্যাকাল্টি মেম্বার নিয়োগ করা যায়। গবেষণার মানোন্নয়নে শিক্ষকদের আর্থিক প্রণোদনা এবং প্রমোশনের জন্য গবেষণার মান সংযুক্ত করা উচিত। একাডেমিক খ্যাতি, চাকরির বাজারে সুনাম বাড়াতে হলে ভালো মানের শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।
শিক্ষার গুণগত উন্নতি না ঘটলে কোনো উন্নয়নই টেকসই করা সম্ভব নয়। এ কারণে নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা না করে বিদ্যমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার গুণগত মান বাড়ানোর কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষক নিয়োগে যোগ্যতা ও গবেষণার ওপরেও গুরুত্ব দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়ন এবং গবেষণার গুণগত মানের বিষয়ে অধিকতর গুরুত্ব দিতে হবে। সেই সঙ্গে গবেষণার মান বাড়াতেও বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেরা ৫০০ তালিকায় কীভাবে অবস্থান করতে পারে, সে বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তার সময় এসেছে। এ জন্য প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান থাকতে হবে। যারা মাস্টার্স করবেন, তাদের গবেষণানির্ভর ডিগ্রি দিলে গবেষণার সংখ্যা এবং শিক্ষার মান বাড়বে, যা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাডেমিক খ্যাতি বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। দ্রুত উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা কমিশন গঠন করতে হবে, যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষকের গবেষণার মান বাড়ানো যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে পদোন্নতি পেতে পিএইচডি ডিগ্রিসহ আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা থাকতে হবে– এ ধরনের নিয়ম করা জরুরি। বিশ্ববিদ্যালয়ে নোংরা রাজনীতি বন্ধ করে গঠনমূলক রাজনীতির পরিবেশ সৃষ্টি করা একান্ত প্রয়োজন। কারণ নোংরা রাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয় র্যাংঙ্কিংয়ে স্থান না পাওয়ার জন্য অনেকাংশে দায়ী।
ড. মো. শফিকুল ইসলাম: সহযোগী অধ্যাপক, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ
পাঠকের মন্তব্য
(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)আর্কাইভ
চেয়ারম্যান, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ, প্রাইম ইউনিভার্সিটি ।
প্রধান উপদেষ্টাঃ প্রফেসর ড. ইঞ্জিনিয়ার মোঃ হুমায়ুন কবির
উপাচার্য, প্রাইম ইউনিভার্সিটি
সম্পাদকঃ লুৎফর রহমান জয়
হটলাইনঃ ০১৭১১১৩১৬৮৫